রাসূলুল্লাহ (সাঃ)এর পবিত্র কবর যিয়ারতের সময় নিষিদ্ধ বিষয়সমূহ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ)এর পবিত্র কবর হুজরা শরীফের অভ্যন্তরে অবস্থিত। তাই কবরের দেয়াল
ছুঁয়ে বরকত নেয়ার জজবা অনেকের মধ্যে থাকলেও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। আসলে
এ ধরনের জজবা-বাসনা থাকাই উচিৎ না। কেননা কবরের চার পাশে তাওয়াফ, কবর ছুঁয়ে বরকত
নেয়া ইত্যাদি শরিয়তে অনুমোদিত নয়। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কঠিনভাবে নিষেধ করেছেন যে তাঁর
কবরকে যেন পূজ্য মূর্তিতে রূপান্তরিত করা না হয়।
আর স্পর্শ ও চুম্বন করার বিধান তো কেবল হাজরে আসওয়াদের বৈশিষ্ট্য। পবিত্র কাবার
রুকনে য়ামেনিও স্পর্শ করার বিধান রয়েছে। এছাড়া অন্য কোনো জায়গা, এমনকী পবিত্র কাবার
অন্য কোনো অংশ স্পর্শ করে বরকত নেয়ারও বিধান নেই। মুআবিয়া (রাঃ) একদা হজ্জ করার সময়
রুকনে শামি ও রুকনে গারবি অর্থাৎ কাবা শরীফের উত্তর পাশের দুই কোণ স্পর্শ করলেন।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) বিরোধিতা করলেন। এরূপ করা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)এর বিধানে নেই, স্পষ্ট
করে তিনি মুআবিয়া (রাঃ) কে বুঝিয়ে দিলেন। মুআবিয়া খলিফা থাকা সত্ত্বেও ইবনে আব্বাস
(রাঃ) এর কথা মেনে নিলেন। হাজরে আসওয়াদ ও রুকনে য়ামেনি ব্যতীত যদি পবিত্র কাবার
অন্য কোনো অংশ স্পর্শ করা শরিয়ত বহির্ভূত কাজ হয়ে থাকে তবে অন্য কোনো জায়গা ছুঁয়ে
বরকত নিতে যাওয়া যে বড়ো বেদআত, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই কবরে ঘর্ষণ মর্দন, গন্ডদেশ
ও বক্ষ লাগিয়ে বরকত নেয়ার ইচ্ছা করা হকপন্থী সকল মুসলমানদের কাছে অবৈধ। বরং এটা
একপ্রকার শিরক।পবিত্র কাবার অনুমোদিত অংশ ব্যতীত অন্য কোনো অংশ মাসেহ করা, ছোঁয়া যদি পুণ্যের কাজ
না হয়ে থাকে তাহলে হুজরার দরজা জানালা স্পর্শ করে কী কোনো পুণ্যের আশা করা যেতে
পারে?। হুজরার দেয়াল ও দরজা-জানালা তো নির্মিত হয়েছে বহু পরে। রাসূলের মহববত
কবরের দরজা-জানালা স্পর্শ করে নয় বরং যথার্থভাবে রাসূলের আনুগত্য-ইত্তেবার
মাধ্যমেই প্রকাশ করতে হয় রাসূলুল্লাহর মহববত ও তাজিম।
বিপদমুক্তি অথবা কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)এর কাছে প্রার্থনা করা
যাবে না। বলা যাবে না যে হে আল্লাহর রাসূল আমাকে অমুক বিপদ থেকে মুক্ত করুন। অথবা
আর্থিক স্বচ্ছলতা দান করুন। কেননা এজাতীয় কাজ করা শিরক। এজাতীয় দোয়া কেবল আল্লাহ
রাববুল আলামিনকে খেতাব করেই করতে হয়।