ওমরাহ ওয়াজিব হওয়ার শর্তসমূহ
হজ-ওমরাহ সহীহ হওয়ার জন্য ব্যক্তিকে অবশ্যই মুসলিম ও জ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে। আর তার
ওপর হজ-ওমরাহ আবশ্যক হওয়ার জন্য তাকে প্রাপ্ত বয়স্ক ও সামর্থবান হতে হবে। মহিলা হলে
হজের সফরে তার সাথে মাহরাম থাকতে হবে। নিচে এর বিবরণ তুলে ধরা হল
হজ ও ওমরাহ সহীহ হওয়ার শর্ত
মুসলিম হওয়া -
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِنَّمَا ٱلۡمُشۡرِكُونَ نَجَسٞ فَلَا
يَقۡرَبُواْ ٱلۡمَسۡجِدَ ٱلۡحَرَامَ بَعۡدَ عَامِهِمۡ هَٰذَاۚ ﴾ [التوبة: ٢٨]
‘হে ঈমানদারগণ, নিশ্চয় মুশরিকরা নাপাক, সুতরাং তারা যেন মসজিদুল হারামের নিকটবর্তী
না হয় তাদের এ বছরের পর।’
[তাওবা : ২৮ ]
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ وَمَا مَنَعَهُمۡ أَن تُقۡبَلَ مِنۡهُمۡ نَفَقَٰتُهُمۡ إِلَّآ أَنَّهُمۡ
كَفَرُواْ بِٱللَّهِ وَبِرَسُولِهِۦ﴾ [التوبة: ٥٤]
‘আর তাদের দান কবুল থেকে একমাত্র বাধা এই ছিল যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে
অস্বীকার করেছে।’
[তাওবা : ৫৪ ]
আবূ হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবূ বকর সিদ্দীক রা. আমাকে বিদায় হজের
পূর্বের বছর, যে হজে তাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজের আমীর
নিযুক্ত করেছিলেন- এমন এক দলের সদস্য করে পাঠালেন যারা কুরবানীর দিন মিনায় ঘোষণা
দিচ্ছিল,
لاَ يَحُجُّ بَعْدَ الْعَامِ مُشْرِكٌ وَلاَ يَطُوفُ بِالْبَيْتِ عُرْيَانٌ.
এবছরের পর আর কোন মুশিরক হজ করবে না এবং কোন উলঙ্গ ব্যক্তি বাইতুল্লাহ্র তাওয়াফ
করবে না।
[বুখারী : ১/৩৬৯]
বুঝা গেল, এতে যেকোনো ইবাদত সহীহ ও কবুল হওয়ার জন্য মুসলিম হওয়া পূর্বশর্ত।
আকল বা বিবেকসম্পন্ন হওয়া -
তাই বিবেকশূন্য ব্যক্তির ওপর হজ-ওমরাহ জরুরী নয়। কারণ সে ইসলামের বিধি-বিধান জানা
এবং আল্লাহর আদেশ বুঝার ক্ষমতা রাখে না। সুতরাং সে দায়িত্ব পালনে অক্ষম। তাই
আল্লাহর নির্দেশ পালনে সে আদিষ্ট নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন,
يُرْفَع الْقَلَم عَنْ الصَّغِير وَعَنْ الْمَجْنُون وَعَنْ النَّائِم
‘বাচ্চা, পাগল ও ঘুমন্ত ব্যক্তির ওপর থেকে কলম উঠিয়ে নেয়া হয়।
[ইবন মাজাহ্ : ২৪০২ ]
যদি কেউ ইহরাম বাঁধার পূর্বেই বেহুঁশ বা অজ্ঞান হয়, তার জন্য বেহুঁশ অবস্থায় ইহরাম
বাঁধার অবকাশ নেই। কেননা, হজে বা ওমরাহ আদায়ের জন্য নিয়ত করা তার পক্ষে সম্ভব নয়।
যদি সে ইহরাম বাঁধার পর বেহুঁশ হয় তাহলে তার ইহরাম শুদ্ধ হবে। বেহুঁশ হওয়ার কারণে
তার ইহরামের কোন ক্ষতি হবে না। এমতাবস্থায় তার সফরসঙ্গীদের উচিত তাকে বহন করে নিয়ে
যাওয়া, সে যেন সময়মত আরাফাতে অবস্থান করতে পারে।