তাওয়াফ করার নিয়ম
তাওয়াফ একটি অত্যন্ত বরকতময় এবাদত এবং আল্লাহর কাছে অনুগ্রহ পাওয়ার অন্যতম একটি
মাধ্যম।
আল্লাহ কোরআনে বলেন,
’অতঃপর তওয়াফের জন্যে দ্রুতগতিতে সেখান থেকে ফিরে আস, যেখান থেকে সবাই ফিরে। আর
আল্লাহর কাছেই মাগফেরাত কামনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাকারী, করুনাময়।’
[সূরা বাকারা-১৯৯]
তাওয়াফ করার জন্য মসজিদুল হারামে ডান পা দিয়ে প্রবেশ করূন এবং এই দোয়া পড়ুন।
بِسْمِ اللهِ وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلَى رَسُولِ اللهِ، اللَّهُمَّ افْتَحْ
لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ
উচ্চারণ :
বিসমিল্লাহি ওয়াসসালাতু ওয়াসসালামু ‘আলা রাসূলিল্লাহ, আল্লাহুম্মাফ তাহলী আবওয়াবা
রাহমাতিকা
অর্থ:
আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি। সালাত ও সালাম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের উপর।
হে আল্লাহ, আপনি আমার জন্য আপনার রহমতের দরজা উন্মুক্ত করে দিন’’।
এরপর তাওয়াফ শুরুর জন্য এগিয়ে যান হাজরে আসওয়াদ এর দিকে। হাজরে আসওয়াদে চুম্বন
করুন। যদি চুম্বন করতে না পারেন তাহলে ডান হাত দিয়ে স্পর্শ করে হাতে চুম্বন করুন।
আর যদি স্পর্শও করতে না পারেন তাহলে হাত দিয়ে ইশারা করবেন ও তাকবির বলবেন কিন্তু
তখন হাতে চুম্বন করবেন না।
এরপর পবিত্র বাইতুল্লাহ কে বাম দিকে রেখে ডান দিকে চলতে থাকুন। যখন হাজরে আসওয়াদ এর
পর তৃতীয় কোনা বা রুকুনে ইয়েমেনিতে পৌছাবেন তখন সেই কোনায় চুম্বন করবেন এবং তাকবির
পড়া ব্যাতিত স্পর্শ করবেন। যদি স্পর্শ করা সম্ভব না হয় তাহলেও না থেমে তাওয়াফ
চালিয়ে যাবেন। তাকবির, তাসবিহ-তাহলিল ইত্যাদি পড়বেন। অত:পর আবার কাবা শরিফ বাম দিকে
রেখে রুকুনে শামি ও রুকুনে ইরাকি পার হয়ে রুকুনে ইয়ামেনিতে আসবেন। যদি সম্ভব হয়
স্পর্শ করবেন। তা সম্ভব না হলে হাজরে আসওয়াদ এর দিকে অগ্রসর হবেন এবং রুকুনে
ইয়ামেনি ও হাজরে আসওয়াদ এর মধ্যবর্তী স্থানে কোরআনে বর্ণিত এ দোয়া পড়বেন।
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ
النَّارِ
উচ্চারণ:
রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানা, ওয়াফিল আখিরাতি হাসানা, ওয়াকিনা আজাবান্নার।
অর্থ :
হে আমার প্রভু! আমাকে দুনিয়াতে কল্যাণ দান কর, আখেরাতেও কল্যাণ দান কর এবং আমাকে
জাহান্নাম থেকে বাঁচাও।
[সূরা বাকারা : ২০১]
তাওয়াফে অন্য সময় তাকবির ও অন্যান্য তাসবীহ-তাহলীল জিকির আসকার পড়বেন।
পুরুষদের তাওয়াফে দুটি বিশেষ কাজ করতে হয়।
ইজতেবা : তাওয়াফ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ডান কাঁধ থেকে কাপড় নামিয়ে ডান বগলের নিচ
দিয়ে পেঁচিয়ে রাখা। এটিকে ইজতেবা বলা হয়।
রমল: রমল মানে স্বাভাবিকের চেয়ে জোরে হাঁটা। তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করে স্বাভাবিক
হাঁটার গতির চেয়ে সামান্য জোরে হাঁটা পুরুষদের জন্য আবশ্যক। শেষ চার চক্করে রমল
করতে হবে না। অর্থাৎ স্বাভাবিক গতিতেই হাঁটা যাবে।
তাওয়াফের সাতটি চক্কর পূর্ণ করুন এবং মাকামে ইব্রাহীমে এসে এই দোয়া পড়ুন।
وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى
উচ্চারণ:
ওয়াত্তাখিযু মিম মাকামি ইবরাহিমা মুসল্লা।’
অতঃপর মাকামে ইবরাহিমের পেছনে দুই রাকাত নামাজ আদায় করবেন। প্রথম রাকাতে সুরা
ফাতিহার পর সুরা কাফিরুন এবং দ্বিতীয় রাকাতে সুরা ফাতিহার পর সুরা ইখলাস পড়বেন।
দুই রাকাত সালাত আদায় করার পর জমজম কূপের বরকতময় পানি পান করূন।জমজমের পানি দাঁড়িয়ে
পান করুন এবং পান করার সময় বলুন,
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا، وَرِزْقًا وَاسِعًا، وَشِفَاءً
مِنْ كُلِّ دَاءٍ
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইলমান নাফি’আ, ওয়ারিযক্বাও ওয়াসি’আ, ওয়াশিফাআম মিন
কুল্লি দা’ঈ।
অর্থ :
হে আল্লাহ! আমাকে উপকারী জ্ঞান দান করুন! পর্যাপ্ত রিজিক দান করুন! সব রোগের শিফা
দান করুন
এর মধ্যদিয়ে তাওয়াফের কাজ শেষ। তাওয়াফে রমল ও ইজতিবা পুরুষের জন্য পালন করা
সুন্নাত। এটা নারীদের জন্য নয়।